স্পোর্টস ডেস্ক : আবারো ফিফা বর্ষসেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হলেন লিওনেল মেসি। সোমবার রাতে লন্ডনে অনুষ্ঠিত ‘দ্য বেস্ট ফিফা ফুটবল অ্যাওয়ার্ডস’ অনুষ্ঠানে বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের নাম ঘোষণা করা হয়। এনিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো ফিফার বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কার হাতে তুললেন মেসি।
দুই প্রতিদ্বন্দ্বী আর্লিং হালান্ড ও কিলিয়ান এমবাপ্পেকে পিছনে ফেলে ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলার হিসেবে এই পুরস্কার জিতে নিয়েছেন মেসি। যদিও এবার নিজ হাতে পুরস্কার নিতে যেতে পারেননি তিনি। তার বদলে পুরস্কার গ্রহণ করেছেন ফরাসি কিংবদন্তি থিয়েরি অঁরি।
১৯ ডিসেম্বর ২০২২ থেকে ২০ আগস্ট ২০২৩ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে ছেলেদের ফুটবলে সেরা খেলোয়াড়দের বেছে নেয় ফিফা। বছরের সেরা ফুটবলারদের মধ্য থেকে শুরুতে ১২ জনকে বেছে নিয়েছিল ফিফার বিশেষজ্ঞদের প্যানেল। সেই তালিকা থেকে আন্তর্জাতিক জুরি বোর্ড (যেখানে আছেন জাতীয় দলের কোচ ও অধিনায়ক, ফুটবল সাংবাদিক এবং ফিফার অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে ভোট প্রদান করা সমর্থকরা) বেছে নেন সেরা তিনজনকে। যে তালিকায় ছিলেন লিওনেল মেসি, আর্লিং হালান্ড ও কিলিয়ান এমবাপ্পে। শেষমেশ মেসির হাতেই উঠলো বর্ষসেরার পুরস্কার।
এবারের মতো গতবারও বর্ষসেরা ফুটবলারের সংক্ষিপ্ত তালিকায় ছিলেন মেসি। আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ জিতিয়ে সেবারও একই পুরস্কার জিতে নিয়েছিলেন আর্জেন্টাইন এই জাদুকর। ‘দা বেস্ট’ নামকরণ হওয়ার পরে এবার তৃতীয়বারের মতো এই পুরস্কার জিতলেন মেসি।
উল্লেখ্য, সবমিলিয়ে মেসি ৮ বার ফিফার বর্ষসেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছেন মেসি - ২০০৯, ২০১০, ২০১১, ২০১২, ২০১৫, ২০১৯, ২০২২, ও ২০২৩ সালে। বিভিন্ন নামে ১৯৯১ সাল থেকে বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কার দিয়ে আসছে বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা ফিফা। শুরু থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ‘ফিফা ওয়ার্ল্ড প্লেয়ার অব দা ইয়ার’ নামের পুরস্কারটি একবার জেতেন মেসি, ২০০৯ সালে। সেই থেকে শুরু সেরার মঞ্চে এই মহাতারকার আধিপত্যে বিস্তার। পরের ৬ বছর ফরাসি ম্যাগাজিন ‘ফ্রান্স ফুটবল’ আর ফিফা মিলে দেয় ফিফা ব্যালন দ’র। এই পুরস্কারটি মেসি জেতেন ২০১০, ২০১১, ২০১২ ও ২০১৫ সালে। এরপর ‘দা বেস্ট’ নামকরণ হওয়া পুরস্কারটি মেসি প্রথম জিতেন ২০১৯ সালে। এরপর ২০২২ ও ২০২৩ সালের ফিফা বর্ষসেরা হওয়ার মধ্যদিয়ে পরপর টানা দুইবার পুরস্কারটি জিতলেন তিনি।
তবে মেসির এবারের জয় এতটা সহজে আসেনি। প্রাপ্ত ভোটের ফলাফল অনুসারে, এমবাপ্পে'র স্কোরিং পয়েন্ট ছিলো ৩৫ এবং হালান্ড ও মেসি দুজনেরই স্কোরিং পয়েন্ট সমান ছিলো সমান ৪৮ করে। কিন্তু জাতীয় দলের অধিনায়কদের ভোটে প্রথম পছন্দের তালিকায় ইন্টার মায়ামি তারকা কিছুটা এগিয়ে ছিলেন। আর এজন্যেই বর্ষসেরার পুরস্কারটি পেলেন তিনি।
কাতার বিশ্বকাপ জয়ের পর গত মৌসুমে ফ্রেঞ্চ ক্লাব পিএসজিকে লিগ জেতাতে অনবদ্য ভূমিকা রাখেন এই আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড। লিগ ওয়ানে সর্বোচ্চ অ্যাসিস্ট ছিল তার। যদিও মৌসুম শেষে পিএসজি ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রের ক্লাব ইন্টার মায়ামিতে যোগ দেন তিনি। সেখানে গিয়েও জেতেন শিরোপা। ফিফার বেঁধে দেওয়া সময়ের ভেতর জাতীয় দলের হয়েও দুর্দান্ত খেলেন মেসি। তাই এবার বর্ষসেরা খেলোয়াড় হওয়ার অন্যতম দাবিদার ছিলেন তিনি।
• আরো পড়ুন: ফিফা বর্ষসেরা কোচ (২০২৩) পেপ গার্দিওলা
মেসির মতো পিএসজিকে গত মৌসুমের ফরাসি লিগ শিরোপা জেতাতে ভূমিকা রাখেন এমবাপ্পেও। শেষ ২০ ম্যাচে লিগ ওয়ানে ১৭ গোল করেন এই ফরোয়ার্ড। মৌসুম শেষে সর্বোচ্চ গোলদাতার পাশাপাশি লিগ ওয়ানে সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারও জেতেন তিনি। পুরো মৌসুমেই ছিলেন দুর্দান্ত ফর্মে।
গত মৌসুমে ট্রেবলজয়ী ম্যানচেস্টার সিটির অন্যতম সদস্য হালান্ড। গতি, শক্তি ও ফিনিশিং সক্ষমতা দিয়ে নাজেহাল করে রাখতেন প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারদের। ইউরোপিয়ান গোল্ডেন শুসহ, প্রিমিয়ার লিগের গোল্ডেন বুট, সেরা খেলোয়াড় ও সেরা তরুণ খেলোয়াড়ের পুরস্কার জেতেন তিনি। ফিফার বেঁধে দেওয়া সময়ের ভেতর ৩৩ ম্যাচে ২৮ গোল করেন এই নরওয়েজিয়ান ফরোয়ার্ড। কিন্তু শেষ পর্যন্ত অল্পের জন্য কপাল পুড়লো তার।
এমএইচইউ/তিতাস টাইমস২৪






0 মন্তব্যসমূহ