নিউজ ডেস্ক : গতকাল থেকে আজ পর্যন্ত টানা দুদিন সিলেটে ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও মুষলধারে বৃষ্টির কারণে সিলেটের নদ-নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এরই মধ্যে বন্যায় প্লাবিত হয়েছে নগরীসহ জেলার ১২টি উপজেলা। আশ্রয়কেন্দ্রে উঠতে শুরু করেছে পানিবন্দি মানুষ।
আজ সকাল ৯টা পর্যন্ত সিলেটের সুরমা, কুশিয়ারা ও সারি গোয়াইন নদীর ছয়টি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাস জানান।
সিলেট জেলার আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন বলেন, “গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ১৫৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আর মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ৪৪ মিলিমিটার। এই বৃষ্টিপাতের পানি সিলেটের সীমান্তবর্তী উপজেলা দিয়ে নামছে। এর আগে গত ২৯ মে টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। পরবর্তীতে ৮ জুনের পর থেকে বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। তারপর গতকাল (১৭ জুন) ঈদের দিন থেকে ফের টানা বৃষ্টিতে সিলেটে আবারও বন্যা পরিস্থিতি দেখা দেয়। আজ সকাল থেকে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে শুরু করেছে।”
মঙ্গলবার সকালে সিলেট নগরীর তালতলা, মাছিমপুর, যতরপুর সোবাহানীঘাট ও উপশহর এলাকার কোথাও কোথাও হাঁটু পানি দেখা গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাস বলেন, “বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। পরিস্থিতি খুব খারাপের দিকে যাচ্ছে।”
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুসারে, মঙ্গলবার (১৮ জুন) সকাল ৯টা পর্যন্ত সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে ১ দশমিক ৩৩ সেন্টিমিটার ও সিলেট পয়েন্টে শূন্য দশমিক ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
কুশিয়ারা নদীর পানি অমলশিদ পয়েন্টে শূন্য দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার ও ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে শূন্য দশমিক ৭৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
আর সারি নদীর সারিঘাট পয়েন্টে শূন্য দশমিক ৩৫ সেন্টিমিটার এবং সারি-গোয়াইন নদীর গোয়াইনঘাট পয়েন্টে শূন্য দশমিক ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
পাউবো সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, ‘চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাত হওয়ার কারণে সিলেটের নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। সেখানে এভাবে বৃষ্টিপাত অবিরাম চলতে থাকলে সিলেটের অবস্থা খুবই ভয়াবহ হবে। চেরাপুঞ্জিতে যদি প্রতিদিন ২০০ মিলিমিটারের অধিক বৃষ্টিপাত হয় তা হলে সিলেটে বড় বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।
সিলেট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার মো. ওমর সানী আকন সোমবার রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, “কয়েকদিন ধরে জেলায় এবং পাশের দেশ ভারতের চেরাপুঞ্জি, শিলং ও আসাম অঞ্চলে ভারি বৃষ্টির কারণে বন্যা পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে। ইতোমধ্যে নগরীসহ জেলার ১২টি উপজেলা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে।“
তবে পরিস্থিতি মোকাবেলায় জেলা প্রশাসন তৎপর রয়েছে বলে জানিয়েছেন সহকারী কমিশনার।
এনবিআর/নিজিস্ব প্রতিবেদক/সিলেট/তিতাস টাইমস২৪
0 মন্তব্যসমূহ