বিশেষ প্রতিবেদক : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় ১৭৬টি ইটভাটার মধ্যে ৯৬টিই অবৈধ। পরিবেশের ক্ষতি করে চালানো এসকল ইটভাটার অধিকাংশই কৃষিজমি, হাটবাজার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশে গড়ে তোলা হয়েছে, যা আইনের লঙ্ঘন। এখানে অতি নিম্নমানের কয়লা পোড়ানোরও অভিযোগ রয়েছে। ইটভাটা থেকে নির্গত কালো ধোঁয়ায় বায়ুদূষণ হচ্ছে। পাশাপাশি ক্ষতি হচ্ছে ফসলের। হুমকির মুখে পড়েছে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, বিজয়নগর, সরাইল, ও নাসিরনগর উপজেলার বেশ কয়েকটি ইটভাটায় পরিদর্শন করে দেখা গিয়েছে, বেশির ভাগই স্থাপন করা হয়েছে কৃষিজমিতে কিংবা হাটবাজার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আশপাশে। এসকল ইটভাটার এক কিলোমিটারেরও কম দূরত্বে জনবসতি রয়েছে।
ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন অনুযায়ী, ইটভাটার জন্য জেলা প্রশাসকের অনুমতি নিয়ে মজা পুকুর, খাল বা বিল, দিঘি বা নদ-নদী অথবা হাওর বা চরাঞ্চলের পতিত জায়গা থেকে মাটি কাটতে পারবে। তবে এই জেলায় গত কয়েক বছর ধরে প্রতি মৌসুমে কৃষিজমির উপরিভাগের মাটি কাটা হচ্ছে ইটভাটার জন্য। জেলার বিজয়নগর, নবীনগর, এবং সরাইল উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষিজমির মাটি সবচেয়ে বেশি কাটা হচ্ছে। মূলত ইট ভাটার মালিক এবং দালালদের প্রলোভনে পড়ে কৃষকরা জমির টপ সয়েল বা উপরিভাগের মাটি বিক্রি করছেন। এর ফলে ফসলি জমির উর্বরাশক্তি হ্রাস পাচ্ছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পরিবেশ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যমতে, জেলায় ১৭৬টি ইটভাটার মধ্যে ৯৬টি অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে অবৈধ ৯৬টি ইটভাটার মধ্যে ৫০টিরও বেশি ইট ভাটার কার্যক্রম এখনো চলছে। এছাড়া ৬টি ইট ভাটার মালিক পরিবেশ অধিদপ্তরের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন। মূলত জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না থাকা, অননুমোদিত জায়গায় ইট ভাটা স্থাপন এবং ইট পোড়ানোর পদ্ধতি সঠিক না থাকাসহ বিভিন্ন কারণে কোনো একটি ইটভাটাকে অবৈধ ঘোষণা করে পরিবেশ অধিদপ্তর। জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর ছাড়াও ইটভাটা স্থাপনের জন্য কয়েকটি দপ্তর থেকে অনুমোদন নিতে হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পরিবেশ অধিদফতরের উপপরিচালক খালেদ হাসান বলেন, ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১৩ সালে করা হয়েছিল। আইনটি বাস্তবায়ন হয় ২০১৬ সালে। এই সময়ের মধ্যে অনেক স্থানে কৃষিজমি এবং স্কুলের পাশে ইটভাটা স্থাপন করে ফেলেন মালিকরা। ফলে এগুলো হুট করে আমরা বন্ধ করে দিতে পারছিনা। তবে অবৈধ ইটভাটাগুলোর বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চলে।
এনএইচআর/ব্রাহ্মণবাড়িয়া/তিতাস টাইমস২৪





0 মন্তব্যসমূহ